★নতুন/পুরাতন সবার প্রিয় বাজরিগার এভিয়ারিকে জীবানুমুক্ত করনের প্রয়োজনীয়তা ও করনীয়ঃ
বাজরিগার পাখি বর্তমানে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সহজেই লালনপালন করা যায় এমন একটি পাখি। অভিজ্ঞ ব্রিডারদের পাশাপাশি নতুনরাও খুব অল্প সময়েই দক্ষতার সাথে বাজরিগার পালন করে সফলতা পেয়েছেন এমন অজস্র উদাহরণ চারপাশে আছে।
ঋতু বৈচিত্রের এই দেশে নতুন বা পুরাতন সকল ব্রিডারকেই পাখি পালনের ক্ষেত্রে বছরের বিভিন্ন সময়েই নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। যার অন্যতম হলো ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া বা নানারকম বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ পরজীবি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পাখির মৃত্যু। অনেকসময় যা মহামারী আকারে পুরা এভিয়ারী ছড়িয়ে পড়ে পুরা এভিয়ারীতেই ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
এক্ষেত্রে আমাদের একটু সচেতনতা বা একটু বেশি মনোযোগ বা দৃড় ইচ্ছা শক্তিই পারে আমাদের প্রিয় এভিয়ারিকে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবিদের আক্রমণ হতে রক্ষা করতে। এজন্য আমাদের এভিয়ারিকে প্রতিনিয়ত জীবানুমুক্ত করন প্রক্রিয়ায় মধ্যে রাখতে পারলেই সেটা আমার/আপনার সকলের প্রিয় পাখিগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত সম্ভব। আজ কি কি কারনে বা মাধ্যমে এভিয়ারিতে জীবানু সংক্রমন হতে পারে, কি কি রোগ হতে পারে জীবানু সংক্রমণের কারণে আর এভিয়ারিকে জীবানুমুক্ত করনের উপায় ও কি কি সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন এনিয়ে কথা বলবো।
★জীবানু সংক্রমণের সম্ভাব্য কারণসমূহ★
১)নতুন পাখি হতেঃ নতুন/পুরাতন সকল পাখালই দোকান বা অন্য পাখালদের হতে পাখি কিনে বা সংগ্রহ করে থাকেন। যা অনেকসময় ব্যাহ্যিকভাবে দেখতে সুস্থ মনে হলেও অভ্যন্তরীণ জীবাণু বহন করতে পারে।
২) নোংরা/অপরিষ্কার এভিয়ারিঃ আমাদের অনেকেই পাখির মিউটেশন বা ডিম/বাচ্চা নিয়ে অত্যন্ত আগ্রহী হলেও পাখির ঘরের/এভিয়ারির পরিষ্কার/পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে যথেষ্ট উদাসীন। যা ফলে প্রাণঘাতী জীবানুদেরকে দাওয়াত দেয়ারই সামিল।
৩) অন্ধকার/স্যাঁতসেতে পরিবেশঃ বদ্ধ বা পর্যাপ্ত আলো চলাচল নেই এমন অন্ধকার/স্যাঁতসেতে পরিবেশ পাখিদের জীবনঘাতি রোগ জীবানুদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠার জন্য যথেষ্ট।
৪)অপরিষ্কার খাবারের বাটি বা পানির পাত্র হতে জীবানু সংক্রমণ হতে পারে।
৫) ব্রিডিংয়ের জন্য পুরানো হাড়িকে জীবানুমুক্ত না করে বারবার ব্যবহার। হাড়িতে বাচ্চা থাকাকালীন অবস্থায় তা দিনের পর দিন অপরিষ্কার রাখা।
৬) অপরিষ্কার খাবার/ পানি ও মেয়াদ উর্তীন্ন বিভিন্ন খাবার/ এগফুড বা বাসায় বানানো এগফুডে দেয়া ডিম ভালোমতো সিদ্ধ না করা।ভালোমতো পানিতে পরিষ্কার না করে শাকসবজি দেয়া।
৭) পাখির ঘরে বা বারান্দায় নিজেসহ দর্শনার্থীদের অপরিষ্কার অবস্থায় যাওয়া।
৮) বাড়িতে তেলেপোকা, টিকটকি, ইদুর ছাড়াও ঘরের অন্যান্য পোষা প্রাণী যেমন কুকুর বিড়াল হতে ও প্রানঘাতী জীবানুদের আক্রমণ হতে পারে।
এছাড়া ঋতু পরিবর্তনের ফলে গরম,বর্ষা বা শীতে প্রকৃতিতে ভিন্ন ভিন্ন আচরণে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবি ছত্রাকদের আক্রমণে আপনার এভিয়ারিতে পাখির বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
★বিভিন্ন ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া/পরজীবিদের দ্বারা সৃষ্ট রোগসমূহ ও লক্ষনঃ
১)মাইটসঃ এটি একটি পরজীবি প্রাণী, যা মূলত তিন প্রকার।ক) ফেদার মাইটসঃ মূলত বড় পাখী হতে বাচ্চারা আক্রান্ত হয় যার ফলে বাচ্চাদের পালক/ লেজ পড়ে যায়। পালকের গোড়াতে রক্ত জমে থাকে। চুলকানি ও এর একটি লক্ষণ।
খ)স্কেলি মাইটসঃ বয়স্ক পাখিদের এই পরজীবির আক্রমনে পা, ঠোঁট ও মুখে সাদা স্কেলের মতো দেখা যায় যা অনেক সময় শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যাঘাত করতে পারে। পাখি মারাও যেতে পারে এর ফলে।
গ) এয়ার স্যাক মাইটসঃ পাখির শ্বাসনালীতে এই ভাইরাসের আক্রমনে শ্বাস কষ্ট ও গলা দিয়ে ঘড়ঘড় শব্দ হয়, লেজ উঠানামা করে। পাখিকে দ্রুতে চিকিৎসা দিতে না পারলে মারা যেতে পারে।
২)ক্যাঙ্কারঃ Trichomonas columbae এবং Trichomonas gallinae নামক প্রটোজোয়া হতে এই রোগে হয়। যা পাখিদের লালা বা ক্রপমিল্কের মাধ্যমে বাচ্চাদেরকেও আক্রমণ করতে পারে। এরফলে শ্বাসনালী ও ক্রপে খাবার যাওয়াতে বাধার সৃষ্টি করে। পাখি দ্রুত দুর্বল করে ফেলে ও লিভার অকার্যকর
হয়ে পাখি বা হাড়ির সব বাচ্চা একে একে মারা যায়।
৩)কক্সিডিওসিসঃ এক ধরনের প্রটোজোয়া প্যারাসাইটের কারণে এই রোগ হয়ে থাকে, যা মারাত্মক মহামারি রূপে এভিয়ারিতে ছড়িয়ে পরতে পারে। এটা মূলত পাখি আমাশয় রোগ। এর কারণে পাতলা রক্তযুক্ত পুপ্স হবে যা দেখতে হলদে বা সবুজ ভাব থাকবে। বমি, গা ফুলিয়ে রাখা, অরুচির কারনে পাখি দ্রুত দুর্বল হয়ে মারা যায়।
৪) সালমোনেলাঃ সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে পাখির পাকিস্থলী/অন্ত্র মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়। যার ফলে পাখি হলদে পুপ্স সহ ভেন্টে পুপ্স লেগে থাকে, পুপ্সের সাথে রক্তও যায়। পাখি গা ফুলিয়ে মাথা পিছনে করে রাখে। খুব অল্প সময়েই এটা অন্য পাখিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। পাখিকে দ্রুত চিকিৎসা না দিতে পারলে বাঁচানো সম্ভব হয় না।
৫)সিটাকোসিসঃ ক্লামাইডিয়া সিটাসি নামক ক্ষুদ্র ব্যাকটেরিয়া হতে এর উদ্ভব যা মানুষের মাঝেও ছডিয়ে পড়তে পারে। দূর্গন্ধযুক্ত আঠালো ধরনের পুপস্ যা ভেন্টের চারপাশে লেগে থাকবে, শ্বাসকষ্ট, ঝিমুনি, সর্বক্ষন লেজ উঠানামা,নাক ও চোখের চারিদিকে ভেজা এ রোগের অন্যতম লক্ষ্মণ । ছোয়াচে এই রোগের কারণে প্রতিবছরই অনেক পাখাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।
৬)ট্রাইকোমোনিয়াসিসঃ খুবই ছোয়াচে এই রোগে এভিয়ারির সব পাখি অল্প সময়েই আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে। এটি প্রটোজোয়াজনিত একটি রোগ, তীব্র শ্বাসকষ্ট, লেজ উঠানামা, সবুজ পায়খানা,মুখ দিয়ে লালা, বমি,ঝিমুনি হতে পারে। যা আক্রান্ত বাবা মা হতে বাচ্চাদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এছাড়া ও বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া/ভাইরাস/পরজীবিদের আক্রমনে পাখির সাদা/ চুনা পায়খানা, ডাইরিয়া,লাইস, ক্রিমি,পক্সসহ, অন্ত্রের নানারকম জটিল রোগের অন্যতম কারণ যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আমাদের এভিয়ারিকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
★ এভিয়ারিকে জীবানুমুক্ত রাখার উপায় ও করনীয়ঃ
১) প্রথমত প্রতিদিনই আপনার সব পাখি গতিবিধি নুন্যতম ১৫-৩০ মিনিট মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করতে হবে। মনে রাখবেন একটি আক্রান্ত পাখি কখনোই সুস্থ পাখির ন্যায় প্রাণচাঞ্চল ও উজ্জীবিত থাকবে না।
২) পাখির জন্য পরিষ্কার মান সম্মত খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। পাশাপাশি খাবার ও পানির পাত্র, ট্রে সবকিছু পরিষ্কার করতে হবে প্রতিদিনই। যদি সেটা সম্ভব না হয়, অন্তত ১ দিন পরপর অবশ্যই ক্লিন করতে হবে।
৩) শাকসবজি পাখির জন্য খুবই উপকারী, তবে তা দেয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। যারা হোমমেড এগফুড দেন, তারা ডিম ভালোমতো সিদ্ধ করে দিবেন।
৪) নতুন কেনা পাখিকে এভিয়ারির অন্য পাখির সাথে দেয়ার আগে কোয়ারেন্টাই বা পৃথকভাবে সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে নুন্যতম ১৫ দিন আলাদা রেখে স্বাভাবিক সিডমিক্সের পাশাপাশি ৭ দিন ACV কোর্সে দিতে হবে ও বিশেষ পর্যবেক্ষনে কোনো অসুস্থতা বা দুর্বলতা নেই এমন নিশ্চিত হওয়ার পরই অন্য পাখিদের সাথে রাখা যেতে পারে।
৫) এভিয়ারিতে রোদের আলো ও স্বাভাবিকভাবে বাতাস চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। তবে পাখির গায়ে সরাসরি বাতাস যেন না লাগে। যারা ঘরের ভিতরে পালে তারা ১/২ দিন পরপর ছাদে বা বাড়ির যেখানে রোদ পরে সেখানে পাখিকে ১৫/২০ মিনিট,রোদে রাখুন। রোদের আলো ব্যাকটেরিয়া/ ভাইরাস বা পরজীবিদের জন্য সাক্ষাৎ যম।
৬) পাখির হাড়িতে বাচ্চা থাকলে প্রতিদিনই পরিষ্কার করতে পারলে ভালো হয়, অন্তত ১ দিন পরপর পরিষ্কার করুন।আর ১টি হাড়ি ৩/৪ বারের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। সেইসাথে প্রতিবার হাড়ি দেয়ার আগে জীবানু নাশক স্প্রে( টিমসেন, কোয়াটোভেট ইত্যাদি) বা আগুনে হাড়ির ভেতর হালকা পুড়িয়ে নেয়া আবশ্যক।
৭)পাখির ঘরে বা বারান্দায় তেলেপোকা, টিকটিকি, ইদুর নিধন/চলাচল রোধ করা ছাড়া অন্য বিকল্প নেই। পাশাপাশি ঘরের পোষা কুকুর বা বিড়ালও পাখিদের নাগালের বাইরে রাখার চেষ্টা করুন।
৮) আপনি নিজে বা যেকোনো দর্শনার্থীকে এভিয়ারি প্রবেশের আগে যথাসম্ভব পরিষ্কার/পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতের পাশাপাশি জীবানুনাশক স্প্রে ব্যবহার করা উচিত।
৯) ব্রিডিংয়ে থাকা বা হাড়িতে বেবি আছে এমন পেয়ার ও বাচ্চাদেরকে আলাদাভাবে বিশেষ পর্যবেক্ষন করাটা অতিব জরুরি।
প্রাকৃতিক ও কৃত্তিম দুইভাবেই এভিয়ারিকে জীবানুমুক্ত করার কিছু পরিক্ষিত পন্থা নিয়ে এবার কথা বলবো।
★প্রাকৃতিক পন্থাঃ
১)নিমপাতাঃ নিমপাতা মানুষ ও প্রাণীকূল এই দুইয়ের জন্যই বিভিন্ন রোগের নিরামক হিসেবে সবার উপরে অবস্থান। ১০/১২টি নিমপাতা ১৫/২০ মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা হলে তা পাখির খাঁচাসহ পাখির গায়ে স্প্রে করতে পারেন। ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া/পরজীবিদের ধ্বংস করতে এর জুড়ি নাই। প্রতি সপ্তাহে একদিন দিতে পারলে খুবই ভালো। এছাড়া উকুন ও পোকার জন্যও বিশেষ উপকারী।নিমের দ্রবন পাখিকে টানা তিনদিন খেতে দিতে পারলে তা কৃমি ও অভ্যন্তরীণ পরজীবিদের কবল হতে রক্ষা করবে। এছাড়া চুলকানি ও ক্ষত পরিষ্কারে জন্য নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন।
২)রসুনঃ রসুন পাখির জন্য মহাঔষধ যা পরিমান মতো(নাকে সহ্য হয় এমন, বেশি ঝাঁঝাল না) পানির সাথে ব্লেন্ড করে দ্রবন তৈরি করে নিয়ে পাখিকে দেয়া যেতে পারে। রসুন প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক যা শ্বাসনালী ও বুকের জীবানু ধ্বংসের পাশাপাশি পাকস্থলী ও অন্ত্রে টনিকের মতো কাজ করে। এছাড়া শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মাইটস রোগের জন্য বিশেষ উপকারী। পাখির গায়ে স্প্রে করে উকুন জাতীয় পরজীবিকে ধ্বংস ও ক্ষত স্থানের জন্য খুবই ভালো কাজ করে।
৩)ACV/আপেল সাইডার ভিনেগার(অপরিশোধিত)ঃ ACV হলো প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক যা একইসাথে প্রোবায়োটিক ও। পাখির অভ্যন্তরীণ অন্ত্রগুলোকে পরিষ্কার ও জীবানুমুক্ত রাখে। পাখির পেট ও লিভারসহ বাহ্যিক ক্ষততে বিশেষ উপকারী। ডিমের উর্বরতা, কোষ্টকাঠিন্য,পাখি ওজন ঠিকরাখা ও হাড়ের অস্তিমজ্জ্বা তৈরিতেও এর ভূমিকা অপরিসীম। মাসিক ৫-৭ দিন লিটারে ১০ মিলি সুস্থ পাখির জন্য দেয়া যেতে পারে আর অসুস্থ পাখিকে ২০ মিলি পর্যন্ত দিলে ভালো হয়।
৪)এলোভেরাঃ ঘৃতকুমারী বা এলোভেরা একটি রসালো উদ্ভিদ প্রজাতি।বাজরিগার পাখির পরিপাকতন্ত্র সতেজ ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে এর দ্রবনযুক্ত পানি বিশেষ উপকারী। পাখির ডায়েরিয়াতে খুবই ভালো কাজ করে, পাশাপাশি এলোভেরা মিশ্রিত পানি স্প্রে করলে পাখির শরীরের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিপায়, পাশাপাশি যেকোনো ক্ষতে ব্যবহার করে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।
টক দইঃ এটি প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক যা মাসে ৩ দিন লিটারে ২ চা চামচ পরিমাণ ব্যবহারে পাখি অভ্যন্তরীণ পরজীবিদের ধ্বংসে দারুন কাজ করে।এছাড়া পাকস্থলীর জন্য বিশেষ উপকারী।
★কৃত্তিম পন্থাঃ বাজারে ভেটোনারি দোকান গুলোতে মাইটসের জন্য Acimec/Ivermec 1% সহ anti mites killer স্প্রে পাওয়া যায় যা বিশেষজ্ঞ ভেট এক্সপার্টদের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করে অনেকেই উপকৃত হয়েছেন। এছাড়া জীবানুনাশক স্প্রে টিমসেন, কোয়াটোভেট, ভায়োডিন, ফাম ৩০, টাইকোফেন এভিয়ারিতে ব্যবহার করে আপনার পাখির জন্য হুমকিস্বরূপ ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবিদের নির্মূল করতে পারেন।
নীচে মাসিক জীবানুনাশক প্রক্রিয়ার একটি চার্ট দেয়া হলো যা পুরানো ও অভিজ্ঞ ব্রিডারদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে তৈরি। বাজরিগার এভিয়ারির জন্য যা খুবই কার্যকারী।
১) ১ম সপ্তাহঃ Acimec/Ivermec solution লিটারে ২মিলি পাখিসহ,পাখির সকল খাঁচা ট্রে সহ পুরাএভিয়ারিতে স্প্রে করতে হবে ১দিন।পাশাপাশি ১মিলি প্রতি লিটারে মিশিয়ে পাখিকে খাওয়াতেও হবে। যা ফেদার মাইটসের জীবানুদের ধ্বংস করে।
২)২য় সপ্তাহঃ ফাম৩০ লিটারে ২মিলি ও টাইকোফন লিটারে ১ মিলি মিশিয়ে পাখিও খাঁচাসহ পুরা এভিয়ারিতে স্প্রে করতে হবে ১দিন।
৩)৩য় সপ্তাহঃ টিমসেন লিটারে ২ মিলি মিশিয়ে পাখিসহ পুরা এভিয়ারী স্প্রে করতে হবে ১দিন।
৪)৪থ সপ্তাহঃ কোয়াটিভেট লিটারে ২ মিলি একই নিয়মে পাখিও এভিয়ারিতে স্প্রে করতে হবে ১দিন।
উপরের চার্টটি হুবাহু ফেলো করতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি অভিজ্ঞ ভেট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী অন্য কোনো জীবানুনাশক স্প্রেও ব্যবহার করতে পারেন বা নুন্যতম একটি স্প্রে অন্তত সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন। আর মনে রাখবেন প্রাকৃতিক পন্থাগুলো বিশেষ উপকারী। সুস্থ সবল রোগমুক্ত পাখি জন্য এভিয়ারিকে জীবানুমুক্ত করা আপনার/আমার নিজেদের স্বার্থেই অতিব জরুরি ভিত্তিতে নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন, ধন্যবাদ।
*** বিঃদ্রঃ কিছুদিন পাখি পালার পর আমরা অনেকেই নিজে নিজে ভেট বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠি ও নিজের পাখিকে পরীক্ষাগারের গিনিপিগ বানিয়ে ফেলি,পাশাপাশি অন্যকেও পরামর্শ দেয়া শুরু করে দেই, যা খুবই উদ্বেগজনক। পাখির প্রতিটি রোগের আলাদা উপসর্গ ও অসুখের কম বা বেশি আধিক্য অনুযায়ী ওষধ প্রয়োগের ক্ষেত্রেও ভিন্ন মাত্রা বা ভিন্ন ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে। যা একমাত্র অভিজ্ঞ ভেট বিশেষজ্ঞরাই সঠিকভাবে নিরুপন করেতে পারেন। প্লিজ পাখির উপর এক্সপিরিমেন্ট করা হতে বিরত থাকুন।
* লেখাটি গুগলসহ, ফরহাদ ভাই, ডাঃ মান্নান ভাইদের বিভিন্ন লেখার হতে তথ্য উপাত্ত নিয়ে সংকলিত।
* ছবি ও অভিজ্ঞতার আলোকে সাহায্য করেছেন Madhu M Samaddar, AZ Tushar, মামুনুর রশিদ রনি আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
Post a Comment